
হাবিবুর রহমান, মধুপুর ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়ে নানা আয়োজনের মধ্যে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, কারিতাস, ট্রাইবাল ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন, নাগরিক উদ্যোগ, উমেন্স ফান্ড এশিয়া, এসিডিএফ, আচিক মিচিক সোসাইটি, বাগাছাস, গাসু, জিএসএফ, বেলা, কোচ আদিবাসী সংগঠনসহ ২২টি সংগঠন যৌথভাবে দিবসের আয়োজন করে। শনিবার (৯ আগস্ট) গড় এলাকার পীরগাছা সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের উদ্বোধন করেন মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন।
আলোচনা সভায় জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেকের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জনজেত্রার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিতাস সিডিআইয়ের পরিচালক লেখক গবেষক মি. থিওফিল নকরেক। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লুথ্যারন হেলথ কেয়ার বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক লেখক ড. গ্রেনার মারাক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা অব. স্পেশাল জেলা জজ জগদিশ চন্দ্র, এসিডিএফ ও জিএমএডিসির প্রধান উপদেষ্টা অজয় এ মৃ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইমরানুল কবির, বেলা টাঙ্গাইলের বিভাগীয় প্রধান গৌতম চন্দ্র চন্দ, মধুপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি এম রতন হায়দার, কারিতাসের বাঁধন চিরান, আলোক-৩ প্রকল্পের মাঠ কর্মকর্তা সুচনা রুয়াম, পীরগাছা সেন্ট পৌলস ধর্ম পল্লীর পাল পুরোহিত এপোলো রোজারিও সিএসসি, জলছত্র ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত সুবাস কস্তা সিএসিসি, পীরগাছা সেন্ট পৌলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুন মৃ, ভুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এপ্রিল মৃ, থাংয়ানি কোঅপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়নের সভাপতি মিজির মার্টিন মৃ প্রমুখ।
আলোচনা সভায় আদিবাসী গারো নেতৃবৃন্দ বলেন, মধুপুর সমতল অঞ্চলের জন্য আদিবাসীদের ভূমির সুরক্ষায় আলাদা ভূমি কমিশন গঠনসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, তাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে আলাদা নীতি ও বাজেট বরাদ্দের দাবি তোলেন। আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য মাতৃভাষা ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষায় কোটার সুনির্দিষ্ট বাস্তবায়ন। অবিচার, নিপীড়ন ও সহিংসতা বন্ধে একটি জাতীয় ‘আদিবাসী সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন ও সমতল অঞ্চলে বসবাসরত আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠা করা। বিভিন্ন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সরকারী সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে বন্টন বৈষম্য দূরীকরণার্থে অনগ্রসরতার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রনয়ণ করা এবং অধিকতর অনগ্রসর ও বিলুপ্তপ্রায় আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত তাদের সংস্কৃতি সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নীতকরণের ব্যবস্থা করা।
সমতল এলাকার জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়ে বলেন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য ও চাকরির ক্ষেত্রে কোটা বরাদ্দের দাবি জানান। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে তাদের আদিবাসীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ করা, তাদের ভাষা সংস্কৃতি রক্ষাসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে। এ সময় বিভিন্ন গ্রামের গারো-কোচ নারী-পুরুষ শিশু-কিশোরসহ নানা শ্রেনী-পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।