
আদালত সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইলে সদ্য নিয়োগ পাওয়া আদালতের সরকারি আইন কর্মকর্তা (জিপি) বজলুর রহমান মিয়াকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে তার কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন আইনজীবীরা। বজলুর রহমান জিপি পদে নিয়োগ পাওয়ায় সাধারণ আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই ক্ষোভ থেকে মূলত তার কক্ষে তালা ঝুঁলিয়ে দেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে পিপির দুটো কক্ষে তারা ঝুঁলিয়ে দেওয়া হয়। পরে আইন সচিবের মাধ্যমে আইন উপদেষ্টা বরাবর আইনজীবী বজলুর রহমানের নিয়োগ বাতিল করে অন্য কাউকে নিয়োগের জন্য আবেদন করা হয়।
জানা গেছে, গত (৫ মার্চ) আদালতের আইন কর্মকর্তা (জিপি) আব্দুল বাকী মিয়ার মৃত্যুর পর অতিরিক্ত আইন কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত (১০ আগস্ট) অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান মিয়াকে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আইন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিবাদ স্বরূপ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) জিপির কক্ষে তালা দেয় বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা।
টাঙ্গাইল অ্যাডভোকেট বারের কয়েকজন আইনজীবী জানান, ‘বজলুর রহমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে তাদের বিরুদ্ধে (বৈষম্য বিরোধী) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক পোস্ট দিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন, বজলুর রহমান ইতোপূর্বে দেওয়ানি মামলা পরিচালনা করেননি। আদালতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্য যে কোনো যোগ্য আইনজীবীকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তারা।
অতিরিক্ত আইন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জিপি) মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জানান, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে কক্ষে তালা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে প্রশাসনকে অবগত করেছেন। তালাবদ্ধ থাকায় তিনিও কক্ষে প্রবেশ করতে পারেন নি। সোমবার (১৮ আগস্ট) জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জেলা বার সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে বজলুর রহমানের যোগদানপত্র গ্রহণ না করার অনুরোধ জানান।
টাঙ্গাইল জেলা বার সমিতির সভাপতি জহুর আজহার খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বজলুর রহমানকে দুই দিন অফিস না করার জন্য মৌখিকভাবে বলা হয়েছিল। তিনি না মেনে উল্টো বার সমিতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। বজলুর রহমান দম্ভ করে ঘোষণা দিয়েছেন- তিনি লোকজন নিয়ে জিপির কক্ষে প্রবেশ করবেন।
সদ্য নিয়োগ পাওয়া আইন কর্মকর্তা (জিপি) বজলুর রহমান মিয়া জানান, তিনি কখনো কোনো দলের দোসর ছিলেন না। সদ্য জিপি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তাকে ফ্যাসিস্টদের দোসর আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, তার নামে যে অভিযোগ আনা হয়েছে। তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তিনি জিপি নিয়োগ পাওয়ায় একটি মহল তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।