স্পোর্টস রিপোর্টার ॥
সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের কৃতি খেলোয়ার রুপা আক্তারকে সংবর্ধনা দিয়েছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল রনী তার কার্যালয়ে রুপা আক্তারকে সংবর্ধনা দেন। তিনি রুপা আক্তারকে ফুল দিয়ে বরন করে নেন এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সম্মাননা ক্রেষ্ট উপহার দেন। এ সময় সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল রনী কৃতি খেলোয়ার রুপা আক্তার ও তার দরিদ্র পরিবারের পাশে থাকার কথা জানান। অনুষ্ঠানে সখীপুর উপজেলা প্রশাসনে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা, রুপা আক্তারের পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টটি ২০২৫ সালের (১১ থেকে ২১ জুলাই) পর্যন্ত বাংলাদেশের ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। গত (২১ জুলাই) অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে নেপালকে (৪-০) গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ দল অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় । এই টুর্নামেন্টে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কৃতি সন্তান রুপা আক্তার বাংলাদেশ দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কৃতি খেলোয়ার রুপা আক্তার টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কীর্ত্তনখোলা গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক আব্দুর রহিমের মেয়ে। রুপা আক্তার কাদের নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নজরে আসে টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার বর্তমান এডহক কমিটির পরিচালক সাবেক ফুটবলার কামরুন্নাহারের। তিনি দায়িত্ব নেন ফুটবলার রুপা আক্তারের।
তারপর আর রুপা আক্তারের আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বাবা-মা, পরিবার ও ক্রীড়ামোদি সকলের অনুপ্রেরণায় মাত্র ১৭ বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-২০ জাতীয় নারী ফুটবল দলের মধ্যমনি এখন রুপা আক্তার। বিগত ২০২২ সালে বিকেএসপিতে ভর্তির মধ্যদিয়ে জাতীয় পর্যায়ে রুপার পদযাত্রা শুরু হয়। বিগত ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত আন্ডার ১৭ সুব্রত কাপেও বাংলাদেশের হয়ে অংশ নেয়। বিগত ২০২৪ সালের জাতীয় দলের জন্য অনুশীলন শুরু করে রুপা।
চলতি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে জাতীয় দলের হয়ে সাফ গেমস্ ও এএফসিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন করে। রুপার আশা আগামী ২০২৬ সালের নারী বিশ্বকাপে বিশ্বের বুকে নিজেকে মেলে ধরবে। রুপা পরিবার ও ভাইবোন নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে। আপাতত তেমন কোন চাওয়া নেই। শুরুতেই এলাকার সকলের সহযোগিতা পেয়েছে রুপা। তাই তার স্বপ্ন দেশের হয়ে কিছু করার। রুপার বাড়িতে একটি মাত্র আধা পাকা টিনের ঘরে পরিবারের সকলের বসবাস। রুপা ছুটিতে এসে বাড়ির উঠোনে ফুটবলের অনুশীলন করছে। পশু-পাখি লালন পালন করে অবসর সময় কাটাচ্ছে রুপা আক্তার।