
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে এক শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার করেছে ধনবাড়ী থানা পুলিশ। ওই শিক্ষিকার পরিবারের দাবী তাকে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের নেটামশারা নতুন বাজার এলাকায়। বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে স্থানীয় গোবিন্দপুর আলিম মাদ্রাসার কৃষি বিভাগের শিক্ষিকা আই.বি ডেইজি ওরফে জেসমিন আক্তারের ভাড়া বাসা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত শিক্ষিকা জেসমিন আক্তারের বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম মিজানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা অভিযোগ করে জানান, জেসমিনের বিগত তিন বছর পূর্বে পাশ্ববর্তী জামালপুর জেলার রশিদপুর এলাকার আব্দুল মালেকর ছেলে সেনা সদস্য রুবেল আহমেদের সাথে বিবাহ হয়। মাদ্রাসায় চাকরির সুবিধার্থে বিবাহের পর থেকেই নতুন বাজারে বাসা ভাড়া নেয় ও সেই বাসাতেই হোমিও প্যাথিক চিকিৎসা দিয়ে থাকতেন জেসমিন।
তবে, আমার বোন জেসমিন সে গত ৬ মাস পূর্বে তার স্বামী সেনা সদস্য রুবেল আহমদের লিখিত একটি কাগজে যৌতুক, ডেইজির বেতনের টাকা এবং রুবেলের রেশন কার্ডে অন্য মহিলার নাম দেখতে পায়। সেই থেকেই ওই বিষয় নিয়েই প্রায়ই ঝগড়া হতো দু’জনের মধ্যে। গত (২৯ সেপ্টেম্বর) জেসমিনের স্বামী সেনা সদস্য রুবেল ছুটিতে ওই ভাড়া বাসায় আসেন। হঠাৎ করেই আমার অপর বোন জামাই নূরুল ইসলামের কাছে বুধবার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে দশটার দিকে রুবেল ফোন করে জানায়- জেসমিন আত্মহত্যা করেছে। তবে আমাদের দাবী আমার বোন জেসমিন কোনভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে তার স্বামী সেনা সদস্য রুবেল পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফাঁসির মৃত্যু বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই এই ঘটনায় মূল রহস্য বের করে দোষী ব্যাক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
নিহত জেসমিনের বোন জামাই নূরুল ইসলাম জানান, আমাকে মোবাইল ফোনে বুধবার (১ অক্টোবর) রাতে তার স্বামী রুবেল জানায় সে মারা গেছে। খবর পাওয়া মাত্রই ধনবাড়ী থানায় অবগত করে গিয়ে দেখি আমার শালিকা জেসমিনের নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে ও তার স্বামী রুবেল লাশের পাশেই শুয়ে আছে। আমার জানামতে, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাদের সংসার জীবনে দু’জনের মধ্যে অশান্তি ছিলো। রুবেল মাঝে মধ্যেই আমার শ্যালিকাকে মারপিট করতো ও বলতো তোকে মেরে আমি জেলে যাবো সমস্যা নেই। এতে করে আমার মনে হয় এটি রুবেলের পরিকল্পিত হত্যা। এ ব্যাপারে ধনবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।
নিহত জেসমিনের স্বামী সেনা সদস্য রুবেল আহমেদ জানান, আমি বাসায় আসার পর থেকেই একটি জমির খারিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এই কাজের ফাঁকে আমার স্ত্রী জেসমিন আমাকে একাধিকবার ফোন করে। আমি তার ফোন রিসিভ করতে না পারায় এ নিয়ে মাঝে বাগবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে বাসা থেকে গ্যাস সিলিন্ডারের বোতল আনতে বাজারে যাই। বাসায় ফিরে কোন শব্দ না পেয়ে ডাকাডাকির এক পর্যায়ে বাসার উল্টো পাশের দরজা দিয়ে রুমে ঢুকে দেখতে পাই তিনি লাইলনের রশি দিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। দ্রুত তাকে নিচে নামাই বুকে হাত দিয়ে দেখি তার শ্বাস চলছে মাথায় পানি দেই। পরে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য ভ্যান আনতে বাইরে যাই। আমি আর কিছু জানিনা বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এ ব্যাপারে ধনবাড়ী থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার এস আই জাকির হোসেন জানান, ভাড়া বাসা থেকে শিক্ষিকা জেসমিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর মূল কারণ জানা যাবে।






