
মোস্তফা কামাল, সখীপুর ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ধর্ষণ মামলায় শ্রমিক দলের নেতা ফজলু মিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড র্যাব-১৪, ৩নং কোম্পানি। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাতে উপজেলার নলুয়া এলাকা থেকে ফজলু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ওই ইউনিয়নের প্রতিমা বংকী তালুকদারপাড়া (পশ্চিমপাড়া) এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়। এ ঘটনায় শ্রমিক দল নেতা ফজলুল হককে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ফুঁসলিয়ে একটি বনের ভেতর নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিক দল নেতার বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার প্রতিমা বংকী তালুকদারপাড়া (পশ্চিমপাড়া) এলাকার আমজাদ আলীর ছেলে এবং দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ফজলুল হককে আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই ছাত্রীর মেডিকেল পরীক্ষা ও জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য টাঙ্গাইল পাঠায়।
মামলার বিবরণ ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত দাড়িয়াপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক সম্পর্কে ওই ছাত্রীর চাচাতো মামা। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে ফজলুল হক ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যান। পথিমধ্যে ফুঁসলিয়ে একটি বনের ভেতর নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। পরে ওই ছাত্রী মাদ্রাসায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পরিবারকে ডেকে আনলে ওই ছাত্রী সবার সামনে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) বলেন, আমাদের সামনেই ওই শিশু শিক্ষার্থী নিজের মুখে শারীরিক নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছে। সত্য-মিথ্যা যা-ই হোক, এরচেয়ে বেশি কিছু আমরা জানি না। এদিকে ছাত্রীর নানা মাওলানা জোবায়ের কথার সত্যতা স্বীকার করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সখীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কাশেম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ছাত্রী ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। তার মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেন, শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট এখনো হাতে পাইনি। মামলার ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে র্যাব গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে এ ঘটনায় সখীপুর উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মতিন ও সদস্য সচিব বাবুল মিয়া বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে ফজলুল হককে দলীয় প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।