
সখীপুর প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একটি বাড়ি থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৬ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী মেয়ে সাজেদাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নানান রোগে জর্জরিত মা শাহনাজ বেগম (৫৫) ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। শাহনাজ বেগম উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মুচারিয়া পাথার এলাকার শামছুল আলমের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা সূত্রে জানা গেছে, কৃষক শামছুল আলমের স্ত্রী শাহনাজ বেগম দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, পেট ব্যথা ও কিডনি রোগসহ শারীরিক নানান জটিলতায় ভুগছিলেন। অন্যদিকে এই দম্পতির ২৬ বছর বয়সী মেয়ে সাজেদা জন্মগতভাবে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী। বেশ কয়েক দিন সাজেদারও অসুস্থতা বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব কারণে মানসিক ও অর্থনৈতিক চাপে অসুস্থ গৃহবধূ শাহনাজ মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে তাঁর প্রতিবন্ধী মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার পর নিজে রান্না ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে তাঁদের এ অবস্থায় দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য লোকমান হোসেন বলেন, শাহনাজ বেগম প্রায় ২০ বছর ধরে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথাসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। অন্যদিকে প্রতিবন্ধী মেয়ে সাজেদার বয়স ২৬-২৭ হলেও উচ্চতা ছিল দুই বা সোয়া দুই ফুট। ছয় মাস ধরে মেয়েটা মুখে তেমন কিছু খেতে পারত না। তার পেট ফুলে গিয়েছিল। চলাফেরা করতে পারত না। একদিকে শাহনাজ নিজে জটিল রোগে ভুগছিলেন, অন্যদিকে প্রতিবন্ধী মেয়েটিও অসুস্থ। এ অবস্থায় শাহনাজ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, গৃহবধূর স্বামী শামছুল আলম ঘটনার রাতে গোয়াল ঘরের (গরু রাখার ঘর) ভেতরে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে দুজনই গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শারীরিক ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।





