ভূঞাপুরে মাথার খুলি উদ্ধার ঘিরে রহস্য ॥ দেহের সন্ধান মেলেনি

অপরাধ টাঙ্গাইল ভূঞাপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ডোবার পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেহের বাকি অংশের এখনো সন্ধান মেলেনি। সোমবার (৩ জুন) সকালে ভূঞাপুর উপজেলার চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। মাথার খুলিটি ৯ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া মাদ্রাসা ছাত্রী শর্মিলার কিনা এ নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল। তবে ঘটনাস্থলে মিলেছে নিখোঁজ হওয়া ছাত্রীর জামা কাপর। এ খবর পেয়ে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ও ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসে। পরে ঘটনাস্থলের পুরো অংশ কর্টন করে রেখে বিভিন্ন জায়গায় পড়ে থাকা হাড় ও দেহের অন্যান্য অংশ সংগ্রহ করা হয়।
স্থানীয়রা টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানায়, ভূঞাপুর উপজেলা গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় ডোবার পাশে প্লাস্টিকের ব্যাগ টানাটানি করছিল একটি কুকুর। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল মাংসের টুকরো। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল চারদিকে। বস্তাটি টানাটানি দেখে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক উৎসুক জনতার ভিড় লেগে যায়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়েই ছুটে যায় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরেই সুমন মিয়ার মেয়ে তার বাড়ির সামনে থেকে ৯ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া ১০ বছরের ফুটফুটে শিশু নওশীন ইসলাম শর্মিলার বাড়ি। গত (২৬ মে) খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। ধারণা করা হচ্ছে, মাথার খুলিটি হয়তো বা শিশু শর্মিলার। তবে, দেহের অন্যান্য অংশের এখনও কোনো সন্ধান মেলেনি। কোথায় রয়েছে বাকি অংশ এ নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মাথার খুলির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এরপরই এর রহস্য উদঘাটন হবে।

স্থানীয়দের ধারণা, দুর্বৃত্তরা হত্যার পর লাশ ঘুম করার জন্য হয়তো বস্তাবন্দি করেছিল। এটা শর্মিলার মাথার খুলি কি-না সন্দেহ রয়েছে। তবে তারা পুলিশকে গভীর তদন্তের অনুরোধ জানান।ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরেই ৯ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া নওসিন ইসলাম শর্মিলার বাড়ি। গত (২৬ মে) নিখোঁজ হয়। তবে দেহের অন্যান্য অংশের এখনও কোন সন্ধান মেলেনি। শর্মিলার চাচা কাইয়ুম মিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, সোমবার (৩ জুন) সকালে বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতে লাশের গন্ধে বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতে কিছু কুকুর একটি বস্তা টানাটানি করে সমস্ত মাথার খুলি বের করে দেহ লন্ডভন্ড করে ফেলে। দেহের হাড়গোড়ও ছিল খন্ড খন্ড। লাশ দেখে চেনার কোনো উপায় নেই কার লাশ। এটি শর্মিলার লাশ কি না আমরা এখনও নিশ্চিত না। তবে, তার পড়নের লাল পাজামার অংশ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এটিই শর্মিলার মরদেহ হতে পারে। শর্মিলার বাবা সুমন মিয়া টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, গত (২৬ মে) মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শর্মিলা। পরে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি তার। থানায় জিডিও করা হয়। সোমবার (৩ জুন) যেখানে খুলি পাওয়া গেছে ওই জায়গা দিয়ে কয়েকবার খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে। কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। আজ সকালে কুকুরে মাথার খুলি টানাটানি করছিল। পরে লোকজনের খবর শুনে এখানে আসি। বস্তা থেকে যে জামা পাওয়া গেছে সেটি নিখোঁজের সময় সেটি তার মেয়ের পড়নে ছিলো।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয় এবং জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার মহোদয়সহ জেলার উধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এছাড়া ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন অংশ সংগ্রহ করেছে। তিনি বলেন- মাথার খুলির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পরে জানা যাবে মাথার খুলিটি নিখোঁজ শিশু শর্মিলার কিনা। এনিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার টাঙ্গাইল নিউজবিডিকে জানান, দ্রুতই এর রহস্য উদঘাটন করা হবে।

১০০ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *