
স্টাফ রিপোর্টার ॥
এবার চরম ভোগান্তি ও দীর্ঘ যানজটে নাকাল হয়ে ঈদযাত্রায় স্বপ্নরা বাড়ি ফিরেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু দিয়ে ঈদ যাত্রার ৬ দিনে যমুনা সেতু দিয়ে ২ লাখ ৫৫ হাজার ২২০টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। গত (১ জুন) থেকে (৬ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের এসব যানবাহন পারাপার হয়। এর ফলে টোল আদায় হয়েছে ১৯ কোটি ২৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ টাকা। এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সেতু দিয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যাক ৬৪ হাজার ২৮৩টি যানবাহন পারাপার হয়। যা যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর সর্বোচ্চ যানবাহন পারাপার হয়।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, গত (১ জুন) যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে ২৭ হাজার ১৭৩টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ ২৭ হাজার ৮৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৩ হাজার ৮৬৮ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৮ হাজার ২শ’ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৩ হাজার ৫টি যানবাহন পারাপার হয়। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ২৪ লাখ ৪৮ হাজার ২শ’ টাকা।
গত (২ জুন) যমুনা সেতুর ওপর দিয়ে ৩০ হাজার ১৬৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫০ টাকা। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৫ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৭৬৯টি যানবাহন পারাপার হয়। এর বিপরীতে টোল আদায় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার ৪শ’ টাকা।
গত (৩ জুন) সেতুর উপর দিয়ে ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭ টি যানবাহন পারাপার হয়। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।
গত (৪ জুন) সেতু দিয়ে ৫১ হাজার ৮৪৯টি যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ৩০ হাজার ৮৪৫টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ২১ হাজার ৪টি যানবাহন পারাপার হয়। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৭৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫০ টাকা।
গত (৫ জুন) যমুনা সেতু দিয়ে যানবাহন ও টোল আদায়ে নতুন রেকর্ড করে যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ। এদিন সেতু দিয়ে ঈদযাত্রায় ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ৬৪ হাজার ২৮৩টি যানবাহন পারাপার হওয়ায় এ রেকর্ডের সৃষ্টি হয়। যা যমুনা সেতু চালু হওয়ার সর্বোচ্চ সংখ্যক যানবাহন পারাপার করে নতুন রেকর্ড গড়লো ।
এদিকে ছোট-বড় বিপুল সংখ্যক গাড়ি পারাপার হওয়ায় ৪ কোটি ১০ লাখ ৮০ হাজার ৯৫০ টাকার টোল আদায় করেছে কর্তপক্ষ। এর ফলে সেতু চালু হওয়ার পরে এক দিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়েও নতুন রেকর্ড করে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঈদের আগের দিন শুক্রবার (৬ জুন) সেতু দিয়ে ৪৮ হাজার ১৮৪টি যানবাহন পারাপার হয়। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ৩৩ হাজার ৮৫৪ টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে টোল আদায় হয় ২ কোটি ৩৩ লাখ ৮০ হাজার ১৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৩৩০টি যানবাহন পারাপার হয়। এর বিপরীত টোল আদায় ১ কোটি ৯ লাখ ৯২ হাজার ৬শ’ টাকা।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এ মহাসড়ক। এ সড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২৪টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। প্রতিবছরই অতিরিক্ত চাপে মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, ঈদযাত্রায় যমুনা সেতুর দুই পাশে ৯টি করে বুথ দিয়ে মোট ১৮টি বুথ দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এর মধ্যে দুই পাশেই ২টি করে মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা বুথ করা হয়েছিলো।
বিগত ১৯৯৮ সালে সেতুটি চালু হওয়ার পর থেকে কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করে আসছে। বিগত সময়ে সেতুর টোল আদায় করে কমিউটার সিস্টেম নেটওয়ার্ক (সিএনএস)। সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর ২৪ সালের শেষের দিক থেকে বর্তমানে চায়না রোড ব্রিজ কর্পোরেশন টোল আদায় করছে।