স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলে তিন দিনব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব শুরু হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে শুরু হওয়া উৎসবে ৪২টি স্টলে দেশীয় ঐতিহ্য ভাপা পিঠা, দুধের পিঠা, নকশি, চিতই, পাঠিসাপটা, জামাই বরণ পিঠা, ডাল ও তালের পিঠাসহ বাহারী পিঠা স্থান পেয়েছে। উৎসবে ঐতিহ্যবাহি লাঠি খেলা, মেয়েদের হাডুডু খেলা ও বায়োস্কোপ প্রদরশনের পাশাপাশি গ্রামীণ নানা আয়োজন উপভোগ করছে সকল বয়সী মানুষ।
টাঙ্গাইল কালচারাল রিফরমেশন ফোরামের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রানা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব হাসান। উৎসবে স্বাগত বক্তব্য রাখেন লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক আবুল কালাম মোস্তফা লাবু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব গোলাম আম্বিয়া নুরী, জেলা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল মোহন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক রিয়াজুল মওলা প্রমুখ। নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরতে এ ধরনের আয়োজন খুবই সময়োপযোগী বলে মন্তব্য করেন অতিথিরা।
আয়োজকরা জানান, বুধবার (১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসবে থাকবে লাঠি খেলা, ছেলেদের ও মেয়েদের হাডুডু খেলা, সং যাত্রা, যাদু প্রদর্শন, যাত্রাপালা, পুথি পাঠ, লোকজ গান, গোল্লাছুট, ওপেন টু বাইস্কোপ, বাইস্কোপ, কুতকুত খেলাসহ, হামদ, নাথে রাসুল, কীর্তন, শ্যামা সংগীতসহ দেশোজ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই পিঠা উৎসবের মূল আকর্ষণ হলো মেলায় ঢেঁকিতে প্রকাশ্যে চিড়াকোটা ও মুড়ি ভাজা হবে। পিঠা কিভাবে তৈরি হয় সেটা দর্শক ও শিশুদের দেখানো হবে।
পিঠা উৎসব কমিটির আহবায়ক আবুল কালাম মোস্তফা লাবু জানান, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে লোকজ সংস্কৃতি বিলুপ্তি প্রায়। যান্ত্রিক যুগে মোবাইলের কারণে শিশুরা লোকজ ও সাংস্কৃতিক থেকে একেবারে দূরে সরে গেছে। লোকজ সংস্কৃতি কি, শিশুরা তা জানে না। সম্প্রতি অভিভাবকের কাছে জানতে পারলাম, শিশু তার বাবাকে প্রশ্ন করেছে মুড়ি কোন গাছে হয়। মুড়ি যে গাছে ধরে হয় না, শিশুর এমন প্রশ্ন দোষের না। কারণ শিশুরা মাঠে-ঘাটে খেলাধুলার বাস্তবতা থেকে অনেকটাই দূরে। সেই অনুভব থেকে আমরা এ রকম লোকজ সাংস্কৃতিক ও পিঠা উৎসবের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ লোকজ ও সংস্কৃতি আগত ও বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।