মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না- মঈন খান

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর রাজনীতি লিড নিউজ

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী ॥
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেছেন, দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে অবিলম্বে। এটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না। মানুষ ভোট দিতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের রক্তে রয়েছে গণতন্ত্র। আমরা আজ থেকে ৫৩/৫৪ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম কেন? কেন আমরা পাকিস্তান থেকে রেব হয়ে এসেছিলাম? গণতন্ত্রের জন্য। যদি সেই গণতন্ত্র না থাকে তাহলে সেই স্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে যাবে। কাজেই আমরা সেই ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি সহনীয় পর্যায়ে রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির দাবি এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনারসহ বিভিন্ন দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে আগত জনতার উদ্দেশ্যে আব্দুল মঈন খান প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা কি ভোট না দিয়ে সংস্কার নিয়ে ডক্টরেট গবেষণা করবেন বছরের পর বছর ধরে। সেটা চান? তখন জনতা হাত তুলে না না উচ্চারণ করেন। এ সময় মঈন খান বলেন, আমরা ভোট দিতে চাই। সংস্কারের গবেষণা নিয়ে ছয় মাস, ছয় বছর কাটাতে চাই না। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের কথা।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলাম এই দেশের দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক সাম্যের অধিকারের জন্য। এদেশের মানুষ যাতে অন্তত দুটি খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ভেতরে থাকে। কোন দুর্নীতিবাজ যারা মজুদদারি করে খাদ্যদ্রব্য গুদামে রেখে দাম বাড়িয়ে দেয়, ব্যবসা বানিজ্যে অতিরিক্ত মুনাফা করে। সেই পাকিস্তানিরা যখন আমাদের এভাবে নিয়ন্ত্রণ করছিল, আমাদের অর্থনৈতিক হিস্যা জোর করে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমরা বিদ্রোহ করেছিলাম ’৭১ সালে। কাজেই আজকে নতুন করে বলতে হবে দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক অধিকার সংরক্ষিত করতে পারে নাই। তিনি বলেন, আমি তার ছোট একটি উদাহারণ দিচ্ছি। এই সরকারের অর্থনীতি কেন ব্যর্থ হয়েছে। আইএমএফ বাংলাদেশে যে এসডিআর সহায়তা দিয়েছিল। তার কিস্তি গতকাল বন্ধ করে দিয়েছে। কেন বন্ধ করেছে? এই সরকার যে অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে এজন্য। কাজেই আজকে বাংলাদেশের মানুষকে এই সরকারকে প্রশ্ন করতে হবে আপনারা দরিদ্র মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেন। যাতে করে মানুষ দুটি খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে। সামনে রমজান আসছে, রমজানের সময় যদি আবার জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বি হয় তাহলে বাংলাদেশের মানুষ সেটা সহ্য করবে না।
মঈন খান আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের রক্তে রয়েছে গণতন্ত্র। আমরা ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করি। আমি না খেয়ে থাকতে রাজি আছি, কিন্তু ভোট না দিয়ে থাকতে রাজি না। আমি ভোট দিব, আমি অবিলম্বে ভোট দিব। বাংলাদেশের মানুষ এই অন্তবর্তী সরকারকে সাদর সম্ভাষন করে দেশে এনেছে। একটি গুরুদায়িত্ব দিয়েছে, তাদেরকে একটি ম্যান্ডেট দিয়েছে। সেই ম্যান্ডেটটি কী? স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ থেকে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তর করতে হবে। এই ম্যান্ডেট বাংলাদেশের মানুষ অন্তবর্তী সরকারকে দিয়েছে। আমরা অনুরোধ করবো, এই অন্তবর্তী সরকার যেন তাদের সে গুরুদায়িত্বে প্রতি সজাগ হয়ে জনগনের যে প্রত্যাশা তা অবিলম্বে পূরণ করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করে বাংলাদেশে পূণরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। যে প্রত্যাশা বাংলাদেশের মানুষ অন্তবর্তী সরকারের উপর করেছে সে প্রত্যাশা পূরণ করে তারা সম্মানের সঙ্গে জনগনের ক্ষমতা, জনগনের হাতে ফিরিয়ে দিবে।
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটু, সহ সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম ওবায়দুল হক নাসির। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল।
বিকেল সাড়ে তিনটায় সমাবেশে শুরু হলেও দুপুরের আগে থেকেই বিএনপিসহ এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করে। দুপুরের মধ্যে সমাবেশস্থল পরিপুর্ন হয়ে যায়। জাতীয়তাবাদী সামাজিক, সাংস্কৃতিক দলের (জাসাস) শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

৪০ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *