
আদালত সংবাদদাতা ॥
রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানীর ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামী স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেয়ার পর কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অপর আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। স্বীকারোক্তি দেওয়া দুই আসামী হলেন- মোঃ সবুজ ও শরীফুজ্জামান শরীফ। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামী হলেন- শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট নওরিন করিম শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুই আসামীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। এই আদালতেই শহিদুলের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এই তিনজনকে টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সাভারের ডেন্ডা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আহসানুজ্জামান জানান, বিকেলে তাদের আদালতে নেয়া হয়।
টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট বিকেল ৩টা ৪০ থেকে রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত আসামী সবুজ ও শরীফুজ্জামানের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। তারপর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আসামী শহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশ নিয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, মোঃ সবুজ ও শরীফুজ্জামান শরীফ জবানবন্দিতে গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজশাহীগামী বাসে ডাকাতির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে বাসে কোন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে তারা জানিয়েছেন। তবে নারী যাত্রীদের কাছ থেকে গহনা ও টাকাপয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তাদের গায়ে হাত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে ইউনিক রোড রয়েলসের আমরি ট্রাভেলস নামক বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসটিতে ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুরে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটিকে বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকাপয়সা, মালামাল লুন্ঠন করে। এ সময় তারা নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানিও করে। ঘটনার তিনদিন পর বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে মির্জাপুর থানায় ওমর আলী নামে এক যাত্রী মামলা দায়ের করেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের বদর উদ্দিন শেখের ছেলে। মোঃ সবুজ শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে। এবং অপর আসামী শরীফুজ্জামান শরীফ সাভারের টানগেন্ডা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ডাকাতির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃ জেলা বাস ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও পুলিশ চিহ্নিত করতে পেরেছে বলেও তিনি জানান।