
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মধুপুরে শালবন ও বনভূমিতে বসবাসকারী উভয়ের অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে এ বনকে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায় বনবিভাগ। আর এই লক্ষে মধুপুর বনভূমির সীমানা চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেরিবাধ মৌজায় সীমানা চিহ্নিতকরণের মধ্য দিয়ে এ কাজের সূচনা হয়।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, মধুপুরে ৪৫ হাজার ৫৬৫ একর বনভূমি রয়েছে। এক সময় শাল-গজারিতে পরিপূর্ণ ছিল এই বন। এখানে বিচরণ করতো নানা প্রাণী। কালের আবর্তে প্রাকৃতিক বনের বড় একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। বন্য প্রাণীরও বিলুপ্তি ঘটেছে। বনভূমির বড় একটি অংশ দখল হয়ে গেছে। বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে যে ভূমি রয়েছে তাতেও বিদেশি প্রজাতির গাছ দিয়ে কৃত্রিম বন সৃজন করা হয়েছে। ফলে মধুপুর বনের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে। গত আগস্টে অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বন মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মধুপুর বনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
মধুপুরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্টির সংগঠন জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা কয়েক দশক ধরে বন ও বনের অধিবাসীদের অধিকারের জন্য কাজ করছেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর মধুপুরের শাল বনের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা এবং বনে বসবাসকারী ক্ষুদ্র জাতি গোষ্টির অধিকার সংরক্ষনের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। আর এর অংশ হিসেবেই মধুপুরে সীমানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মধুপুরের বেরিবাধ এলাকায় সীমানা চিহ্নিত করা হয়। এ সময় টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্টির প্রতিনিধি ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, আগামী ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগবে এই সীমানা চিহ্নিত করতে। পরবর্তীতে এ বনকে ইউনেস্কোর মাধ্যমে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র হিসেবে ঘোষনা করা গেলে একটি মাইল ফলক হবে। এতে বনে বসবাসকারীদের অধিকার সংরক্ষিত হবে। আবার ঐতিহ্যবাহী বনটিও রক্ষা পাবে।