সাদ্দাম ইমন ॥
তৃতীয় দফায় দুই দিন অবরোধের কর্মসূচির দ্বিতীয় ও শেষ দিনে রাজপথ দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগ। সকাল থেকে অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে টাঙ্গাইল জেলা ও উপজেলার আশপাশের সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিএনপির ডাকা তৃতীয় দফায় দুই দিন অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় ও শেষ দিনে রিকশা, ভ্যান, সিএনজি, লেগুনা ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি চলছে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও ট্রাক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। অবরোধ চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের কাউকে রাজপথে দেখা যায়নি। অবরোধের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতের কাউকে পিকেটিং করতেও দেখা যায়নি। বিএনপির ডাকা সেই অবরোধে টাঙ্গাইলের রাজপথ দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগ। নাশকতা বা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থার জন্য পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার রয়েছে। সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও দুরপাল্লার যানবাহন চলাচল মহাসড়কে কম দেখা গেছে।
অবরোধের সমর্থনে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের কোনো কর্মসূচির দেখা না মিললেও জনগণের জানমাল রক্ষা ও জনজীবনের নিরাপত্তায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকাল থেকে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে অবরোধের প্রতিবাদে শহরের আশেকপুর ও রাবনা বাইপাসে শান্তি অবস্থান নিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করেছে। এ সময় টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনির, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুনসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বক্তব্যে তারা বলেন, আমরা ভোর থেকে অবস্থান নিয়েছি। বিএনপি-জামায়াতের কোনো অস্তিত্ব নেই। সবকিছু ঠিক আছে। জনগনের জানমালের নিরাপত্তায় আমরা সতর্ক। শুনেছি বিএনপি-জামায়াত এখানে আসবে, তবে তাদের কোনো দেখা নেই। দেশের সম্পদ আমাদের রক্ষা করতে হবে। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত অশুভ শক্তির আগুন সন্ত্রাস ও সহিংসতা প্রতিরোধে অবস্থান কর্মসুচী পালন করছে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শহরের বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় বাস কাউন্টার বন্ধ। কয়েকটি কাউন্টার খোলা থাকলেও যাত্রী সংকট রয়েছে। আতঙ্কে অনেকে বাস ছাড়তে পারছে না। সড়কেও যান চলাচল একেবারে কম। তবে এখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে। অবরোধের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে দূরপাল্লার বাস কম চলাচল করছে। তবে ট্রাক ও ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। এছাড়া জেলার অভ্যন্তরীণ সকড়কগুলোতে যথারীতি যান চলাচল করতে দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল ছিল স্বাভাবিক। পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা বলছেন, বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এ কারণে ভোর থেকে কাউন্টার খোলা রাখা হয়েছে। কিন্তু যাত্রী সংকট রয়েছে। তাই বাস ছাড়া হচ্ছে না। বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার যাত্রী শূন্য দেখা গেছে। যাত্রী না থাকায় বাস কাউন্টারের লোকজনদের বসে থাকতে হচ্ছে বলে জানান তারা। তবে যাত্রীরা ঝুঁকি এড়াতে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে গন্তব্যে ছুটছেন। শহরের অভ্যন্তরীণ প্রধান সড়কসহ পাড়ামহল¬ার সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শরফুদ্দীন বলেন, মানুষের জীবনযাত্রা ও যানমাল স্বাভাবিক রয়েছে। এরপরও শহর ও মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।