স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান ও লীলাকীর্তন অনুষ্ঠানের তার কেটে বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই অনুষ্ঠানস্থলের সন্নিকটে একটি খড়ের স্তুপে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের আটিয়া মামুদপুর গ্রামের দাসপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ৯৯৯ এ কল দিয়েও পুলিশের সহায়তা না পাওয়ায় আতঙ্কে রাত কাটান দাসপাড়া এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু তাই নয়, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) ভোর থেকে কবি গানের আসর চলার কথা থাকলেও আতঙ্কে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) কালী পূজা শেষে মন্দির প্রাঙ্গনে তিনদিন ব্যাপী মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান, লীলাকীর্তন ও কবি গানের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ছিল লীলাকীর্তন অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান চলাকালীন রাত এগারোটার দিকে হঠাৎ অনুষ্ঠানে সংযোগ দেওয়া বিদ্যুতের তার কেটে দেন জব্বর দেওয়ানের ছেলে কবীর দেওয়ান। পরে চলমান অনুষ্ঠানটি বিঘ্ন ঘটে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই অনুষ্ঠান স্থলের পাশে একটি খড়ের স্তুপে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। এতে অনুষ্ঠান স্থলে আসা ভক্ত ও ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ৯৯৯ এ সহায়তা চেয়ে কল দেয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসী আতঙ্কে রাত কাটালেও ওই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় সারা রাতে পুলিশের কোন সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। দলবেধে পালাক্রমে পাহারা দিয়ে রাতের অনুষ্ঠান শেষ করেন। তবে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে পূর্ব নির্ধারিত কবি গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হন। তবে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বেলা এগারোটার দিকে মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান বলে জানা গেছে।
কবীর দেওয়ান জানান, আমার বাড়ির বিদ্যুৎ লাইন হতে আর্থিন লাইনের সংযোগ দেন। এতে বাড়িতে বিদ্যুতের সমস্যা হচ্ছিল। একাধিকবার মন্দির কমিটিকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আমি শুধু আর্থিন লাইনটি বিচ্ছিন্ন করেছি। এতে মন্দির কমিটির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাড়ি ভাংচুর করেছে।
মন্দির কমিটির সভাপতি রতন মনিদাস বলেন, জব্বার দেওয়ানের ছেলে কবীর দেওয়ান রাতে বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এছাড়া পামের একটি খড়ের স্তুপে আগুন দেয়া হয়। সারা রাত আতঙ্কে পার করলেও ৯৯৯ এ কল দিয়েও পুলিশের সহায়তা পাননি তারা। দলবেধে পালাক্রমে পাহারা দিয়ে রাতের অনুষ্ঠান শেষ করেছেন। পূর্বনির্ধারিত শুক্রবারের কবি গানের আসর বন্ধ করে বসে আছেন বলে জানান।
মির্জাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গিয়াাস উদ্দিন জানান, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বেলা এগারোটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। সকল ধরনের আইনী সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।