এ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি বিলুপ্ত হবে- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক

টাঙ্গাইল ধনবাড়ী মধুপুর রাজনীতি লিড নিউজ

হাসান সিকদার ॥
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তারা বারবার ভুল করছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। আদালত কর্তৃক তারা অপরাধী। বেগম খালেদা জিয়াও এতিমের টাকা চুরির দায়ে আদালত থেকে শাস্তি হয়েছে। তাদের আরেক নেতা থাকে বিদেশে। দেশে আসার সাহস নেই। তারা নির্বাচনে দাঁড়াতে পারে না। কাজেই বিএনপি মনে করে নির্বাচন হওয়া উচিত নয়। কারণ বিএনপির নেতৃত্ব অন্য কেউ নিয়ে নেবে। আন্তর্জাতিক মহলও পর্দার অন্তরাল থেকে বিএনপিকে নির্বাচন অংশগ্রহণ করার জন্য বলেছে। কিন্তু তারা নির্বাচনে আসছে না। এ দেশে মুসলিম লীগ নামে একটি দল ছিলো, সেটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমেও বিএনপির বিলুপ্ত হবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীনের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি-জামায়াত ও রাজাকারদের উদ্দেশ্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বলেন, তাঁরা এখনো দেশে আছে। এই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আবারো ক্ষমতায় এসে দেশকে ধ্বংস করতে চায়। নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা চালাচ্ছে। বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোটের দিন স্কুল-কলেজে আগুন দিয়েছিল। জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। বিগত ২০১৫ সালে একটানা ৯০ দিন অবরোধ-হরতাল চালিয়েছে। কিন্তু তাঁরা সফল হতে পারেনি। আমরা তাদের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে এখনো টিকে আছি। তাঁরা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও ট্রেন্ডারবাজ। আমরা এখনো তাদের এদেশে শান্তিতে রেখেছি। কেও বলতে পারবে না আওয়ামী লীগ এ সকল কর্মকা-ে জড়িত। কখনও কোন ক্রমেই আওয়ামী লীগ আন্দোলন, সংগ্রামে ব্যর্থ হয় নাই। আগামী নির্বাচন তাদের বিরুদ্ধে একটি আন্দোলনের অংশ। আমরা এই নির্বাচনেও বিজয়ী হবো। বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে আনার জন্য ৩৮ মিনিট টেলিফোনে কথা বলেছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রীর আহবানে সাড়া দেননি। খালেদা জিয়া মনে করেছিল আন্দোলন, সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস, রেললাইন তুলে, বিদ্যুত লাইন কেটে, গাড়িতে আগুন, পুলিশ হত্যা করে আন্দোলন সফল করবে। তাদের ইচ্ছে মতো নির্বাচন কমিশন করে, একটি ভূয়া নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে। সেসময় সাড়া জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের সন্ত্রাস, আন্দোলনকে প্রত্যাখান করেছে। আবার ২০১৮ সালের নির্র্বাচনে এসেছিল। সেই নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠ, সুন্দর, নিরপক্ষ একটি নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন কমিশন সারাবিশ্বের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিবে। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সেটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু সাধারণ ভোটার ও দলীয় নেতাকর্মীরা নৌকা প্রতিকের পক্ষেই থাকবে, দলের জন্য কাজ করবে। দল ও দলের বাহিরে বহু পরগাছা গজিয়ে উঠেছে। এই পরগাছা সব সময়ই ক্ষতিকারণ। এই সব পরগাছাদের উপড়ে ফেলা হবে। দেশের শান্তিপূর্ণ সংসদ নির্বাচনে এই পরগাছারা যেন সমস্যা তৈরি করতে না পারে সেজন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে এবং তাদের রুখে দিতে হবে। এরা বিএনপি-জামায়াতের সাথে আতাঁত করে আওয়ামী লীগকে দ্বিধা-বিভক্ত করতে চায়। তাদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধু ও দলের আদর্শ ও শক্তিকে বৃদ্ধি করে শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে আবারও প্রধানমন্ত্রী করতে হবে। আমি মনে করি যারা নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে তারা সকলেই শক্তিশালী প্রার্থী। এটা মূল্যায়ন করবে ভোট দিয়ে জনগণ। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের মধ্য দিয়েই দেশের ভোটাররা তা প্রাণ করবে। আমরা দেখবো কে কতটা জনপ্রিয়। আমি জয়ের ব্যাপারে ১০০ ভাগ আশাবাদী। বর্তমান সরকারের সকল উন্নয়ন ও দ্বাদশ নির্বাচন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের ঘরে-ঘরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, বাংলাদেশে ১৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আজ সারা পৃথিবীর মানুষ তাকিয়ে দেখছে। ১৫ বছরে দেশ ও জাতির নিকট যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেগুলো আমরা পূরণ করেছি।
এরপর কৃষিমন্ত্রী টাঙ্গাইল-১ (ধনবাড়ী-মধুপুর) মনোনয়নপত্র ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আসলাম হোসাইনের কাছে নিজ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামছুন নাহার চাঁপা, ধনবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা, মধুপুর পৌরসভার মেয়র সিদ্দিক হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর ফারুখ আহমাদ ফরিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী, ভাইস চেয়ারম্যান শরিফ আহমেদ নাসির, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন প্রমুখ।

 

 

 

১৭৯ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *