ভূঞাপুরে সোনালী ব্যাংকের গ্রাহকরা আত্মসাতের টাকা ফেরত পাচ্ছে

টাঙ্গাইল ভূঞাপুর লিড নিউজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখার গ্রাহকের ম্যানেজার কর্তৃক সঞ্চয়পত্রের আত্মসাত করা টাকা ফেরত পাচ্ছেন গ্রাহকরা। বুধবার (১৩ মার্চ) সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখা কার্যালয় থেকে এই টাকাগুলো ফেরত দেওয়া হয়। এতে ৮৪ জন গ্রাহকের মধ্যে ৫৭ জন গ্রাহককে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
গ্রাহক মর্জিনা বেগম বলেন, সোনালী ব্যাংকে ২১ লাখ টাকা রেখেছিলাম। টাকাগুলো কৌশলে সোনালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম আত্মসাত করেছিল। পরে অনেক আন্দোলনের পর টাকাগুলো ফেরত পেয়েছি। আরেক গ্রাহক ববিতা রানী বলেন, ভাবছিলাম টাকা ফেরত পাব না। কিন্তু অবশেষে আমার জমাকৃত ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। আত্মসাতের টাকা ফেরত পেয়ে ভালো লাগছে।
গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যাংকের উর্ধ্বধন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখার ম্যানেজার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, গ্রাহকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আত্মসাতের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। ৫৭ জন গ্রাহকের ২ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৮৪ জন গ্রাহককে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ফেরত প্রদান করা হবে।
জানা যায়, সোনালী ব্যাংকের গোবিন্দাসী শাখা’র সাবেক ম্যানেজার শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দেয়। পরে গ্রাহকরা একাধিকবার ব্যাংক ঘেরাও, মানববন্ধন ও রাস্তা অবরোধ কর্মসূচিসহ ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হলে তদন্তপূর্বক প্রায় ৯ মাস পর গ্রাহকদের মাঝে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। শহিদুল ইসলাম ম্যানেজার হিসেবে সোনালী ব্যাংক গোবিন্দাসী শাখায় বিগত ২০২০ সালে যোগদান করে। এরপর দীর্ঘ ৩ বছর ২ মাস কাজ করেন সেখানে। এই দীর্ঘ সময়ে তথ্য প্রযুক্তিতে মেধা সম্পন্ন শহিদুল ইসলাম কৌশলে ব্যাংকের ১৩০ জনের সঞ্চয়পত্রের টাকা লুজ চেকের (জরুরি উত্তোলণের জন্য একক পাতা) মাধ্যমে অন্য একাউন্টে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা সরিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়া উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের ভাতার ৬ লাখ ৮১ টাকাও গায়েব করা হয়েছে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম তার বড় ভাই ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া গ্রামের মহির উদ্দিনের তালুকদার এগ্রো ফার্ম ও কালিহাতী উপজেলার আদাবাড়ি গ্রামের খালেদা বেগম নামে পলাশ এগ্রো ফার্মের অ্যাকাউন্টসহ তার বন্ধু বান্ধবদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা আত্মসাত করেন। এছাড়া খালেদা বেগমের মেয়ের জামাই পটুয়াখালী জেলায় দুদকের উপ-পরিচালক মামুন চৌধুরীর সাথে শহিদুল ইসলামের বন্ধুত্বের কারণে ওই হিসাব নম্বর ব্যবহার করে টাকা সরানোর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে গোবিন্দাসী শাখা হতে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। এসব অভিযোগের পর কিছুদিন শহিদুল ইসলাম আত্মগোপনে থাকেন।

 

 

 

৩৫০ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *