ঈদের আগে টাঙ্গাইলে চড়া গরুর মাংসের দাম ॥ মুরগির দোকানে ভিড়

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল সদর লিড নিউজ

সাদ্দাম ইমন ॥
ঈদকে ঘিরে টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে মাছ-মাংসসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার। এদিকে ক্রেতাদের বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে ঈদের পূর্বমুহূর্তে বাড়তে শুরু করেছে সবকিছুর দাম।
টাঙ্গাইলের পার্ক বাজার, সিটি বাজার, ছয়আনি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০০ টাকা। সবধরনের মুরগিরতেও স্বস্তি নেই ক্রেতাদের। তবুও ভিড় দেখা গেছে মুরগির দোকানগুলোতে। ক্রেতাদের অসন্তোষ সত্ত্বেও বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের আগে আরো বাড়তে পারে দাম। শনিবার (৬ এপ্রিল) কয়েকটি বাজার ঘুরে গরু ও মুরগির মাংসের দামের এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে এই মুর্হুতে সব ধরনের মাংসের দামই বাড়তি যাচ্ছে। রোজা শুরুর আগে বিভিন্ন স্থানে গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি হলেও রমজান মাস উপলক্ষ্যে দাম বেড়ে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তবে ঈদকে সামনে রেখে বর্তমানে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংসও প্রতি কেজি ১১০০ টাকা থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ঈদকে ঘিরে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও, এটি এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে। যা কিছুদিন আগেও ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল। এছাড়া সোনালী মুরগির দামও বেড়ে প্রতি কেজি এখন ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে কক মুরগি প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছরের শেষ দিকে হঠাৎ করে বাজারে ব্যবসায়ী ও খামারিরা দামে ছাড় দিয়ে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। তখন গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি কেজি ৬৫০ টাকা। তবে সে দামে কিছুদিন বিক্রি হলেও এরপর বাজারে গরুর মাংসের দাম আবার বাড়তে থাকে। পবিত্র শবে বরাতের সময় গরুর মাংসের দাম ওঠে প্রতি কেজি ৭৫০ টাকা। এরপর কিছুদিন আবারও ৭০০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে আবার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, ঈদকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এখন সেটা অসহনীয় পর্যায়ে আছে। বাজারে লেগেছে ঈদের হাওয়া। যে যার খুশিমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে যাই ধরা হয়, সেটারই দাম বেশি। সবকিছুর দাম বেশি। চার-পাঁচদিন আগেও মুরগি ছিল কেজি ২০০ টাকা, কিন্তু এখন দাম বেড়ে ২৪০ টাকা।
বাজার করতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, দিনদিন মাছ-মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় আজকে দেখছি মাছের বাজার চড়া। যেকারণে কিনতে গেলেও বারবার হিসেব করতে হয়। এখন আর আগের মতো প্রতি সপ্তাহেই গরুর মাংস কেনা যায় না।
শামীম ইসলাম নামক আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে ব্রয়লার থেকে শুরু করে মুরগিসহ সব ধরনের মাংস বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। বলতে গেলে নিয়মিত এসবের দাম বাড়ছে, দাম নিয়ন্ত্রণে থাকছে না কখনোই। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে দশ টাকা পাঁচ টাকা বাড়তে বাড়তে ব্রয়লার মুরগির দাম এখন প্রতি কেজি ২৪০ টাকা। যা কয়েকদিন আগে ও ১৮০/ ১৯০ টাকা ছিল। গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, যা আজকের এসে দেখি ৮০০ টাকা। তিনি বলেন, বাজারে বাড়তি দাম দেখার বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কেউ নেই। বাজার মনিটরিং থাকলে এসব অসৎ ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের পকেট এভাবে কাটতে পারত না। গরুর মাংস বিক্রেতা নাঈম হাসান জানান, তিনি গরুর মাংস বিক্রি করছেন ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি। নাঈমের ভাষ্যমতে, এরপরও তিনি লাভের মুখ দেখতে পারছেন না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বাজারে গরুর দাম চড়া, যেকারণে বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। আগে প্রতি সপ্তাহে দুইটা গরু জবাই করতাম, ঈদের আগে প্রতিদিন দুইটি করছি। গরুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়েই মাংসের দাম বাড়াতে হয়েছে। বাজারে গরুর খাবারের দাম বেশি। সেই সঙ্গে যুক্ত হয় পরিবহন খরচ, এটাও অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশি।

 

 

 

 

 

৩২২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *