
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে একটি মাদ্রাসার আয়ের উদ্দেশ্যে নির্মিত দোকান ভাড়ার নাম করে ১০ বছর ধরে দখলে রাখার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এসআইসহ তিনজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের ফোরকানিয়া নূরানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসাকে কেন্দ্র করে। অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যের নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বর্তমানে পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, মির্জাপুর উপজেলার বানাইল ইউনিয়নের দেওড়া দক্ষিণ পাড়া এলাকায় বিগত ১৯৬০ সালে মাদ্রসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মানুষের অনুদানে চলে আসছে মাদ্রাসাটি। মাদ্রসার আয় বৃদ্ধির জন্য মাদ্রাসা কমিটি বিগত ২০০৫ সালে দেওড়া বাজারে একটি ভবন নির্মাণ করে সেখানে কয়েকটি দোকান প্রস্তুত করে। ওই ভবনে পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম ১টি দোকান ভাড়া নেন।
মার্কেটের অন্য ভাড়াটিয়ারা হলেন- মুতালেব, লাল মিয়া, বজলুর রহমান এবং রাতুল মিয়া। জাহাঙ্গীর আলম নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করলেও বিগত ২০১৬ সাল থেকে ভবনের ভাড়াটিয়া ও স্থানীয় রাতুল মিয়া, বজলুর রহমান, রেজাউল কাজী, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন ও মুনছের মিয়ার সাথে যোগসাজশ করে ভাড়া না দিয়ে দোকান নিজের দখলে রেখেছেন। জাহাঙ্গীরের সাথে যোগ দিয়ে ভাড়া দেন না বজলুর রহমান এবং রাতুল মিয়া। তারা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পাই না। গত (২৪ মার্চ) মাদ্রাসার সভাপতি জাকির হোসেন এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিনের মতের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মামলায় ফাসানোর ভয় দেখানো হতো। তিনি কাউকে জেএমবি, হেফাজত আবার কাউকে শিবির তকমা দিতেন। মামলার ভয়ে মালয়েশিয়া পারি জমানো দেওড়া গ্রামের সমেজ উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম এসব অভিযোগ করেন।
মাদ্রাসা কমিটি জবর দখলকারীদের গত (১০ জানুয়ারি) উচ্ছেদের নোটিশ দিলেও দখলকারীরা আমলে না নিয়ে উল্টো বিভিন্নভাবে কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
অভিযুক্ত পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাদ্রাসার একটি দোকান তিনি ৬৫ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ভাড়া নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভাড়ার টাকা পরিশোধ করছেন না। আগে তাদের গ্রাম একটি সামাজের অন্তর্ভূক্ত ছিল। বর্তমানে সমাজ ভেঙ্গে তিনটি সমাজ গঠিত হয়েছে। আমি তিন সমাজের লোক নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনার কথা বললেও বর্তমানে এক সমাজের লোক দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। এজন্যই ভাড়া দেওয়া বন্ধ রেখেছি।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, ভাড়ার টাকা যাতে মাদ্রাসায় যায় তিনি সেই ব্যবস্থা করবেন। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন জানান, পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজন দোকান ভাড়া দিচ্ছেন না। আমরা বারবার নোটিশ দিলেও তারা কর্ণপাত করছেন না।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.বি.এম আরিফুল ইসলাম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খতিয়ে দেখতে বলেছেন।