নাবিক ছেলের মুক্তির খবরে আবেগে আপ্লুত মা-বাবা

টাঙ্গাইল টাঙ্গাইল স্পেশাল নাগরপুর লিড নিউজ

হাসান সিকদার ॥
ঈদের দিন আমরা আনন্দ করতে পারি নাই। ছেলেকে ছাড়া ঈদ মনে হয়নি, একটুও ভালো কেটেনি দুচিন্তায় ছিলাম। ছেলের মুক্তির সংবাদের জন্য সবসময়ই অপেক্ষায় থাকতাম। টিভিতে যখন খবর পেলাম আমার ছেলেসহ জাহাজের সবাই মুক্তি পেয়েছে, এমন কথাটা শুনার পর পর থেকেই আমাদের ঈদ দিনের আনন্দ বইছে। তারপর ছেলে সকালের দিকে কল দিয়ে বলে, বাবা আমি ভালো আছি, কোন চিন্তা করো না। যেদিন আমার ছেলে আমার বুকে আসবে, সেদিন আরও বেশি আনন্দ পাব। মনটা ভরে যাবে আনন্দে। আবেগে আপ্লুত হয়ে একথা গুলো বলছিলেন নাবিক সাব্বিরের বাবা হারুন অর রশীদ। নাবিক সাব্বিরের মুক্তির খবর শুনে তার পরিবারে এখন আনন্দের বন্যা বইছে। সাব্বিরের বাসায় যেন প্রতি দিনই ঈদের আনন্দ লেগেছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজের নাবিক সাব্বির হোসনের টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙা ধলাপাড়া গ্রামে। নাগরপুরের সহবতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিগত ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করে। টাঙ্গাইল শহরের কাগমারি এমএম আলী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্রগ্রাম মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে পাস করে সর্বশেষ গত বছরের ২০২২ সালের জুন মাসে এমভি আব্দুল্লাহ নামক পণ্য বহনকারী একটি জাহাজে মার্চেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরী নেন।
নাবিক সাব্বিরের মা সালেহা বেগম বলেন, সাব্বিবের সাথে একটু কথা হয়েছে। বলেছে মা কোন চিন্তা করো না, আমরা সবাই মুক্তি পেয়েছি, সবাই ভালো আছি। একথা শুনার পর যেন মনটা ভরে গেল। ঈদের দিন আনন্দ করতে পারি নাই, ছেলের চিন্তায়। একটা মাস কিভাবে কেটেছে তা বলতে পারবো না। যখন ছেলে ফোন দিয়ে বললো মুক্তি পেয়েছি, ভালো আছি। কথাটা শুনার পর থেকে যেন ঈদের আনন্দ পুরো পরিবারে বইছে। ছেলেকে কাছে পেলে আনন্দটা আরও বেশি বেড়ে যাবে, আরও খুশি হবো। সাব্বিবের বোন মিতু আক্তার বলেন, ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় এক মাস আমাদের বিষাদের দিন কেটেছে। সকালে এক-দুই মিনিটের মতো আমার ভাইয়ের সাথে আমি ও বাবা-মা কথা বলেছি। আমার ভাই বলেছে আমরা সবাই ভালো আছি, সুস্থ আছি। এ কথা শুনার পর আমাদের খুব ভালো লাগছে, খুব খুশি লাগছে। তবে আনন্দটা আরও বেড়ে যাবে আমার ভাই আমাদের কাছে আসলে। কবে দেশে আসবে তা এখনও বলতে পারছি না। আল্ল¬াহর কাছে হাজারও শুকরিয়া, সুস্থভাবে মুক্তি পেয়েছে। ঈদের দিন আমাদের আনন্দ ছিল না, এখন আমাদের ঈদের দিনের মতো লাগছে।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান বলেন, সাব্বিরের পরিবারের সাথে প্রশাসনের সবসময়ই যোগাযোগ আছে।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ওই জাহাজের ২৩ নাবিককে জিম্মি করা হয়। জাহাজটি কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারামিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।

 

 

 

৩২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *