গোপালপুরে তাপপ্রবাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ না মানায় মুচলিকা দিলেন

গোপালপুর টাঙ্গাইল লিড নিউজ শিক্ষা

নুর আলম, গোপালপুর ॥
দেশজুড়ে চলা তীব্র তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে সরকার আগামী (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার কিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ নির্দেশনা মানছে না। ফলে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। কদিন ধরে দুপুর নাগাদ আগুনের হল্কার মতো বাতাস চোখমুখে লাগে। গরমে অসুস্থ হয়ে উপজেলা হাসপাতালে প্রতিদিনই কয়েক ডজন শিশু ও বয়স্ক মানুষ চিকিৎসার জন্য ভিড় করছে। এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কোন কোন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরো দুপুর জুড়ে ক্লাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
এমন অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বৃহস্পতিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে পৌরসভার সূতি পলাশ মহল্লার দারুল কোরআন ও কওমী মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। তিনি সেখান গিয়ে দেখতে পান শতাধিক শিশু প্রচন্ড গরমের মধ্যে টিনের ঘরে দমবদ্ধ পরিবেশে ক্লাস করছে। তিনি উপস্থিত হওয়ার পর পরই প্রচন্ড গরমে প্রথম শ্রেণির ছাত্র রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু সেখানে কোন পানির ব্যবস্থা ছিল না। এমতাবস্থায় তিনি তার গাড়িতে রাখা খাবার পানি এনে শিশুর মাথায় ও চোখমুখে দেয়ার ব্যবস্থা করান। খবর পেয়ে শিশুর বাবা বাছেদ মিয়া সেখান হাজির হন এবং চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে নিয়ে যান।
ওই অভিভাবক পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানান, প্রচন্ড গরমে যেখানে কোথাও একদন্ড থাকা যায়না, সেখানে প্রতিষ্ঠান প্রধান সরকারি নির্দেশে ছুটি না দিয়ে জলন্ত দুপুর জুড়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন। অভিভাবকেরা সন্তানদের ক্লাসে পাঠাতে বাধ্য হন। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকেনা। তখন টিনের ঘর নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিদিনই কোন না কোন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠান প্রধান আইপিএস বসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফিস আদায় করেছেন। কিন্তু আইপিএস বসাননি। পরে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শেখ সাদী সরকারের নিয়ম লঙ্ঘন করে ক্লাস চালু রাখায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সরকারি নিয়ম মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে মুচলিকা দেন।
একইভাবে পৌরশহরের কোনাবাড়ী বাজারে লাইটহাউজ ল্যাবরেটরী স্কুল পুরো দুপুর জুড়ে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ পয়ে ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা সেখানেও হাজির হন। তিনি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান। ওই স্কুলের কয়েকজন অভিভাবক সংবাদকর্মীদের জানান, স্কুল প্রধান মৌখিক ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোন শিশু ক্লাস না করলে পরীক্ষায় নাম্বার কমিয়ে দেয়া হবে। ফলে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের ক্লাসে পাঠাচ্ছেন। স্কুল প্রধান হাবিবুর রহমান ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং মুচলিকা দেন। দুই প্রতিষ্ঠান জানান, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের জন্য তারা ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
এ বিষয়ে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, স্বাস্থের চেয়ে শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রেখে কোন প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

২৪ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *