স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জেলা-জরিমানা করেও থামানো যাচ্ছে না টিলার লাল মাটি টাকা। শুধু টিলার লাল মাটিই নয়, আবাদী জমি ও নদী এবং নদীর পার থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। শতাধিক ভেকু মেশিন দিয়ে দিনে-রাতে উপজেলার পাহাড়ি এলাকার টিলাসহ বিভিন্ন এলাকায় এই মাটি কাটা হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের পাকা রাস্তা। পাশাপাশি আশপাশের বাড়িঘর ও আবাদী জমি ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে গত চার মাসে ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় এবং ৯ জনকে কারাদন্ড দেন। এরপরও থামানো যাচ্ছে না অবৈধভাবে মাটি কাটা।
জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে এ উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আবাদী জমি, নদী ও নদীর পার এবং পাহাড়ি এলাকার টিলাসহ শতাধিক স্পটে শতাধিক ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিটা ভেকুতে ৮ থেকে ১০টি ভাড়ি ডাম্পট্রাক মাটি পরিবহন করে। এছাড়া উপজেলার গোড়াই, আজগানা, বাঁশতৈল, তরফপুর ও লতিফপুর ইউনিয়নে লাল মাটির বেশকয়েকটি টিলা রয়েছে। মাটি ব্যবসায়ীরা দিনে-রাতে ওইসব টিলার মাটি ভেকু মেশিন দিয়ে কেটে ভাড়ি ডাম্পট্রাকে ইটভাটায় বিক্রি করছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের পাকা রাস্তা ও কয়েকটি সেতু। পাশাপাশি আশপাশের বাড়িঘর ও আবাদী জমি ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে।
টাঙ্গাইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বংশাই নদীর চাঁনপুর সেতুর দক্ষিণপাশে ‘সাবধান’ ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ৫ টনের অধিক যানবাহন চলাচল নিষেধ, লেখা সাইনবোর্ড সাটিয়েছেন। কিন্তু মাটি ব্যবসায়ীরা নিষেধাজ্ঞা না মেনে ক্ষতিগ্রস্ত চাঁনপুর সেতুর উপর দিয়ে ২৫/৩০ টনের মাটিভর্তি ভাড়ি ডাম্পট্রাক অহরহ চলাচল করাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ২৪ ঘন্টা ঝুকিপূর্ণ চাঁনপুর সেতুর উপর দিয়ে মাটি ভর্তি ডাম্পট্রাক চলাচল করছে। সন্ধ্যার পর ডাম্প ট্রাকের সিরিয়াল পড়ে। মাটি ভার্তি ট্রাক চলাচল করলে সেতুটি কাপতে থাকে। তাছাড়া ধুলায় আশপাশের বাড়িঘর ও আবাদী জমি ঢেকে যাচ্ছে। মাটি ব্যবসায়ীদের ভয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে পারে না।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সূত্রধর জানান, মির্জাপুরে পাহাড়ি এলাকায় লাল মাটির টিলা কাটার অপরাধে ১৪ জনের নামে নামে মামলা করা হয়েছে।
মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান জানান, উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মির্জাপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান জানান, গত জানুয়ারি থেকে (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালিয়ে ৪৪ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে মাটি কাটার অপরাধে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।