
আব্দুল লতিফ, ঘাটাইল ॥
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় সকল পর্যায়ের শ্রমিক যখন আনন্দ উল্লাসে নানা কর্মসূচি পালন করছে। ঠিক তখন নির্মান শ্রমিক সালমান (২৪) জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বাঁচার জন্য আহাজারি করছে। ঘাটাইল উপজেলার দেউলাবাড়ি ইউনিয়নের চৈথট্ট পূর্ব পাড়া গ্রামে তার বাড়িতে কষ্ট ও কান্না করছেন পরিবারের সদস্যরা।
সরেজমিনে শ্রমিক সালমানের বাড়ি গিয়ে জানা যায়, গ্রামের আসলাম হোসেনের বড় ছেলে সালমান হেফজ খানায় পড়াশুনা করতো। পরিবারে অভাব অনটন থাকায় সালমানের পড়াশোনা করা হয়নি। ছোট্ট বয়সেই রাজমিস্ত্রীর সহকারি হিসেবে কাজ শুরু করে সালমান। বিগত ২০২৪ সালের মে মাসে আশিক কনস্ট্রাকশনের আওতায় পৌরসভার চান্দশী গ্রামে সালমান রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করছিল। কাজের এক পর্যায়ে বিল্ডিং এর কার্নিশ ভেঙে সালমানের উপরে পড়ে। ঘটনাস্থলে অন্যান্য শ্রমিকরা সালমানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সালমানের মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যাওয়ায় ঢাকায় আর্থিক অনটনের কারণে পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয়নি চিকিৎসা করানোর। সালমান যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আওতায় কাজ করতো তাড়াও তাকে কোন প্রকার সহযোগিতা করেনি।
ঘাটাইলে যখন জাঁকজমকপূর্ণভাবে মহান মে দিবস শ্রমিকরা পালন করছে। ঠিক সেই সময়ে সালমান আহাজারি করে বলেন, কেউ আমার মতো শ্রমিকের খোঁজখবর রাখে না। মালিকরা তো দূরের কথা যাদের সাথে কাজ করতাম সেসব শ্রমিকরাও আর কোন দিন খোঁজখবর নেয়নি। বর্তমানে ভাঙা মাজা নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকি। প্রসার পায়খানা ঘরেই করতে হচ্ছে। এসব নিয়ে কোন প্রকার আফসোস নেই সালমানের।
কারণ কাজের সময় দূর্ঘটনায় তার মাজা ভেঙে গেছে। আর কোন দিন সুস্থ হতে পারবে না এ খবরে স্বয়ং তার স্ত্রী শিশু সন্তান নিয়ে অন্যত্র পালিয়ে গেছে। শুনেছি সে আজ অন্যের সংসার করছে। সালমান বর্তমানে ভাঙা মাজা নিয়ে বিছানায় শুয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। তার বাবা ও মা তাকে বাচানোর জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন।
গ্রামবাসী শিক্ষক খন্দকার হেলাল উদ্দিন বলেন, ২৪ বছর বয়সী সালমান বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এটা মনে হলেই শরীর শিউরে ওঠে। শ্রমিক মালিক বিত্তবান সবার উচিত সালমানকে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা। সনাজের বিত্তবান ও সুধীজনের কাছে গ্রামবাসী ও সালমানের পরিবার সাহায্য প্রার্থনা করেছেন।