টাঙ্গাইলে কৃষকের মাঠ সেজেছে হলুদ ফুলের সাজে

কৃষি টাঙ্গাইল বাসাইল লিড নিউজ

আরিফুল ইসলাম, বাসাইল ॥
শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো কৃষকের মাঠ জুড়ে কেবল চোখে পড়েছে সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। শিশির ভেজা সরিষার হলুদ ফুলের পাপড়িতে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দুলছে। শীতের এই শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো সোনা ঝরা রোদে যেনো চকচকে করছে। প্রকৃতি কন্যা যেনো সেজেছে হলুদ বরণ সাজে। এ যেনো প্রকৃতির ক্যানভাসে অপরূপ রূপে আঁকা হলুদের আলপনায় চোখ জুড়ানো দৃশ্য। ফুলে ফুলে ভরে গেছে কৃষকের মাঠ। মাঠে মাঠে হলুদ বরণ সরিষা ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন।
সরেজমিনে টাঙ্গাইলের বাসাইলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ। সরিষার ফুলে ফুলে ভরে গেছে কৃষকের মাঠ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌমুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। জেলায় ৭৯ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৮১ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৮ হাজার ১২০ হেক্টর। গত মৌসুমের চেয়ে এবার ২৩ হাজার ৪২০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
চাষি ননী গোপাল সরকার বলেন, এ বছর প্রায় চার বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। সরিষার ক্ষেত্র দেখে মনে হচ্ছে সরিষা ভালোই হবে। সরিষার উচ্চ ফলনশীল জাত আসাই কৃষকরা সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করতে চার হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সরিষা আবাদে বেশি লাভবান হওয়া যায়। চাষি শীতল চক্রবর্তী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর সরিষা খুবই ভালো হয়েছে। তিন বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। সরিষা আবাদে খরচ কম হওয়াতে সবাই সরিষা আবাদ করে থাকে। প্রতিমণ সরিষা ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা যায়। চাষি আনন্দ সরকার বলেন, সরিষা আবাদ করতে কোনো শ্রমিক লাগে না। বেশি খরচ করতে হয় না। সার ঠিক মতো প্রয়োগ করলে সরিষা ভালো হয়। কৃষি অফিস থেকে উন্নত জাতের সরিষার বীজ ও সার দিয়ে থাকেন। উন্নত জাতের সরিষা জাত আসাই কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বিঘাতে ৮-১০ মনের বেশি সরিষা হয়। দামও ভালো পাওয়া যায়। এ বছর চার বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি ৪০-৫০ মন সরিষা ঘরে উঠাতে পারবো।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোহাম্মদ দুলাল উদ্দিন জানান, জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌমুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। জেলায় ৭৯ হাজার ৯৪১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৮১ হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। জেলায় ৩৫ হাজার ৪০০ জন কৃষককে সার ও উন্নত জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে। সরিষা জাত টরি-৭ পরিবর্তে উন্নত জাতের বারি-১৪ সরিষা বীজ দেওয়া হয়েছে। যাতে করে কৃষকরা বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করে বেশি লাভবান হন। এছাড়াও কৃষকের জমিতে রোগ-ব্যাধি আক্রমণ না করে সে বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

 

 

 

২৬২ Views

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *