
আদালত সংবাদদাতা ॥
নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতিসহ তিনজনকে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া তিনজন হচ্ছেন- টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান, গোপালপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির ও গোপালপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী কবির হোসেন।
এরা তিনজন গত (৫ আগস্টের) পর আত্মগোপনে চলে যান। গত (৬ জানুয়ারি) তাদের ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে ঢাকার একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য (৯ জানুয়ারি) তিনদিনের রিমান্ডে নেয়।
টাঙ্গাইল আদালত পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানান, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তাদের টাঙ্গাইল আদালতে হাজির করা হয়। প্রথমে গোপালপুরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ওই মামলায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পশুপতি বিশ^াস তাদের তিনজনকেই দুইদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরে টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালতে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমানকে হাজির করে স্কুল ছাত্র মারুফ হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। বিচারক সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল চন্দ্র চন্দ দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, গত (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টাঙ্গাইল শহরে ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল বের করে। ওই মিছিলে গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটে। এতে স্কুল ছাত্র মারুফ নিহত হয়। নিহত মারুফের মা মোর্শেদা বাদি হয়ে দুইশতাধিক নাম উল্লেখ করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। সোহানুর রহমান সেই মামলার অন্যতম আসামি। এদিকে গোপালপুর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির ও ছাত্রলীগ কর্মী কবির হোসেনকে টাঙ্গাইল শহরে গত (৪ আগস্ট) ছাত্র জনতার মিছিলে হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের তিন নেতা কারাগারে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের টাঙ্গাইল শহর শাখার সহ-সভাপতি ইকবাল হায়াতসহ আরও দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
অপর দুইজন হলেন- টাঙ্গাইল পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মুন্না গোয়ালা (৫২) ও কাতুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং টাঙ্গাইল সদর থানা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল কুদ্দুস খান (৫৫)। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গ্রেপ্তারকৃতদের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলকারীরের উপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছাত্রলীগে নেতা ইকবাল হায়াতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক লুৎফর রহমান জানান, ইকবাল হায়াতের রিমান্ড শুনানি হয়নি। আদালত তিনজনকেই কারাগারে পাঠিয়েছেন।