
মোস্তফা কামাল, সখীপুর ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্মের অভিযোগে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে পড়েছেন আব্দুল বাছেদ ওরফে বাছেদ মুন্সি (৫৫)। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপজেলার দেবরাজ বাজারে তাঁর শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। তবে ওই ব্যক্তি নিজেকে জামায়াত নেতা দাবি করলেও সংগঠনটির নেতারা বলছেন, তিনি জামায়াতের কোনো কর্মী বা সমর্থকও নন।
স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত (১৭ আগস্ট) উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের দেবরাজ এলাকার বাসিন্দা বাছেদ মুন্সি এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুরে তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। সেখানে বনিবনা না হওয়ায় ওই নারী ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাছেদ মুন্সির পুরুষাঙ্গ কেটে দিয়ে পালিয়ে যান। পরে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এলাকায় ফেরেন। সম্প্রতি এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা দাবি করেন, বাছেদ মুন্সি এলাকায় নিজেকে জামায়াত ইসলামীর বড়চওনা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি পরিচয় দিতেন। শুক্রবার (২২ আগস্ট) দেবরাজ বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের ব্যানারেও বাছেদ মুন্সিকে জামায়াতের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি লেখা হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক, শহিদুল ইসলাম, তোফাজ্জল, সুলতান ও কাশেম আলী দাবি করেন, বাছেদ মুন্সি একজনকে ধর্ষণ করেছে, আমরা তার বিচার চাই।’ তাঁরা আরও জানান, বাছেদ মুন্সি এলাকায় জামায়াতের সভাপতি পরিচয় দিতেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মনিরুজ্জামান বলেন, বাছেদ মুন্সি আমাদের সংগঠনের কোনো সমর্থক নন। আমাদের কর্মী বা কোনো দায়িত্ব প্রাপ্তও নন। আমি প্রথম ওনাকে ফেসবুকে দেখলাম। এখন নিজে নিজেই কেউ যদি পরিচয় দেন, সেখানে আমাদের করার কী আছে? জামায়াতের পরিচয় দিয়ে থাকলে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এলাকাবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেন, পুরুষাঙ্গ কর্তনের বিষয়ে অভিযোগ দিতে বাছেদ মুন্সি থানায় এসেছিলেন। যেহেতু ঘটনাস্থল গাজীপুরে, তাই তাঁকে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টায় মোবাইল ফোনে আব্দুল বাছেদ মুন্সি বলেন, আমি মূলত জামায়াতে ইসলামী দল সমর্থন করি। তাদের সঙ্গে কয়েক দিন কাজও করেছি। কিন্তু লিখিতভাবে আমাকে কোনো পদ-পদবি দেওয়া হয়নি। ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে ওই মহিলার সম্পর্ক ছিল এটি সত্য। তার ইচ্ছাতেই আমরা গাজীপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে ধর্মীয়ভাবে বিয়েও পড়ানো হয়েছে। কিন্তু কী কারণে সে এমন করল বুঝতেছি না।